২০২০ সালের তুলনায় দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বেড়েছে ৫ গুণ। ওই বছর করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় কেবল ২৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মাদক চোরাকারবার বৃদ্ধি। তবে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ঘটনা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ রাজনৈতিক নানা অজুহাত।
ইউরোপীয়–সৌদি মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত সৌদি সরকার এক হাজার ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। কিন্তু এদের বিচারের প্রক্রিয়া ন্যায়ভিত্তিক ছিল না। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের অনেকেই প্রকাশ্যেই আদালতে বলেছেন যে নৃশংস ও অসহ্য নির্যাতনে মুখে তারা অপরাধে জড়িত হওয়ার স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন।
সৌদি আরবে কেবল গত মার্চ মাসে ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে কথিত সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার দায়ে। অথচ এরা যে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত ছিল তার কোনো প্রমাণ দেখায়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী যে কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকেই সন্ত্রাসী বলে তুলে ধরা হয় সেদেশের বিচার বিভাগের মাধ্যমে। সৌদি আরবে মুসলিম ব্রাদারহুড বা ইখওয়ানুল মুসলিমিনকেও সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ জনগণ শিয়া মুসলমান। সেখানে তৎপর ব্যক্তিদেরকেও ঢালাওভাবে সন্ত্রাসী বলে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হচ্ছে। চলতি বছর কেবল কাতিফ অঞ্চলের ৪৩ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে যাদের মধ্যে অনেকেই ছিল শিশু ও শ্রমিক। তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দিচ্ছিল বলে অভিযোগ আনা হয়েছিল। দুঃখজনক বিষয় হল বিশ্ব সমাজের নীরবতার মুখে সৌদি সরকার রাজনৈতিক দমন অভিযানের অংশ হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করছে এবং পাশ্চাত্য ও বিশ্ব সমাজ এ ব্যাপারে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। 4100844