পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান করো। আর দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না; এবং পরোপকার করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, আর পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চেয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে ভালোবাসেন না। ’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৭৭)
তবে পরোপকার করতে গিয়ে অন্যায় বা গুনাহের কাজে সহযোগিতা করার সুযোগ নেই। কারণ মহান আল্লাহ কাউকে গুনাহের কাজে ও শত্রুতা উদ্ধারে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সৎ কাজ করতে ও সংযমী হতে তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করো। তবে পাপ ও শক্রতার ব্যাপারে তোমরা একে অপরকে সাহায্য করো না। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ২)
পরোপকারের অন্যতম একটি স্তর হলো, মানুষের অভাব মোচনের চেষ্টা করা। যারা দুনিয়াতে মানুষের অভাব মোচনের চেষ্টা করবে, মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের বিপদমুক্ত করবেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করবে না এবং তাকে জালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪২)
দুনিয়াতে মানুষ অনেক সময় বিপদাপদে দিশাহারা হয়ে যায়, তখন ওই বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে যারা দাঁড়াবে, মহান আল্লাহ তাদের আখিরাতের বিপদ থেকে রক্ষা করবেন। এবং বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্য করে, আল্লাহও ততক্ষণ তাঁর বান্দার সাহায্য করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে দুনিয়ার বিপদসমূহের মধ্যকার কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করবে, এর প্রতিদানে আল্লাহ কিয়ামতের দিনের বিপদসমূহের কোনো বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো গরিব লোকের সঙ্গে (পাওনা আদায়ে) নম্র ব্যবহার করবে, আল্লাহ তার সঙ্গে দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় স্থানে নম্র ব্যবহার করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষত্রুটি গোপন করে রাখবে আল্লাহও তার দোষত্রুটি দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে গোপন রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্য করে, আল্লাহও ততক্ষণ তাঁর বান্দার সাহায্য করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৬)
পরিশেষে, যারা মানুষের উপকার করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তা করবে না, তাদের কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে।