IQNA

হিজাব পরার অধিকার নিয়ে আইনি লড়াই

কুইবেক ইসলামী সাংস্কৃতিক পুরস্কার পাচ্ছেন যে নারী

22:33 - February 04, 2023
সংবাদ: 3473283
তেহরান (ইকনা): এ বছর কানাডার কুইবেক ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র (সিসিআইকিউ) স্মারক পুরস্কার পাচ্ছেন মুসলিম শিক্ষার্থী ওয়ায়েম বিন রাজীব। কুইবেক ও কানাডিয়ান সমাজে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্তির জন্য উৎসাহমূলক নানা উদ্যোগ নিয়ে এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৭ সালে কুইবেক মসজিদ হামলায় নিহত ছয় মুসল্লির স্মরণে ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে প্রতি বছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদপত্র ম্যাকগিল রিপোর্টার সূত্রে জানা যায়, ওয়ায়েম বিন রাজীবের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কানাডার মন্ট্রিল শহরে। অটোয়াতে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটিতে সমাজবিজ্ঞান এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অধ্যয়ন নিয়ে স্নাতক করছেন তিনি। এখানে পড়তে এসেই তিনি বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হন। ওয়ায়েম বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক হলেও মন্ট্রিলে ফিরে আসা ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না। কারণ প্রথম বছর আমি সবচেয়ে বেশি ইসলামভীতিপূর্ণ মন্তব্যের মুখোমুখি হয়েছি। রাস্তায় মানুষ আমাকে চিৎকার করে কটু কথা বলেছে।’
 
কুইবেকের ‘বিল টোয়েন্টিওয়ান’ নামের ধর্মনিরপেক্ষ আইনটি কর্মক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের ধর্মীয় প্রতীক সংবলিত পোশাক পরায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়, যা সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, বিশেষত মুসলিম নারীদের ওপর খুবই বিরূপ প্রভাব ফেলে। তখন এই আইনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাষায় সমালোচনা শুরু করেন ওয়ায়েম। তিনি কুইবেক শহরে অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্প্রদায় গঠনে ম্যাকগিলের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট বিল টোয়েন্টিওয়ানের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ২০২২ সালের মার্চে ব্যক্তি ও পেশাগত ক্ষেত্রে আইনটির প্রভাব নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্যানেল ইভেন্ট আয়োজন করেন। এতে হিজাব পরার কারণে চাকরিচ্যুত শিক্ষিকা ফাতেমা আনবারি, কুইবেকে ইসলামভীতির প্রভাব নিয়ে গবেষণায় অংশ নেওয়া পিএইচডি শিক্ষার্থী জয়নব দিয়াবসহ ইহুদি ও শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
 
মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে আইনটির বিরূপ প্রভাবের কথা জানিয়ে ওয়ায়েম বিন রাজীব বলেছেন, ‘আমার প্রধান বার্তা ছিল, আইনটি শুধু মুসলিম নারীদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং তা কুইবেকের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অনুভূতিরও ক্ষতি করে। তাই এই আইনের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা ছাড়া এবং হিজাবকে নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে দেখা বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ না করে আমরা মুসলিম অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করতে পারি না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আমি আমার আওয়াজকে ব্যবহার করতে পেরেছি। আশা করি, আগামী দিনেও আমি এ ধরনের ভূমিকা চালিয়ে যেতে পারব।’
 
সম্প্রতি কানাডায় ইসলামভীতি ও মুসলিমদের ওপর হামলা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মুসলিম নারী ও মেয়েরাই এসব হামলার শিকার হচ্ছেন। গত বছরের আগস্টে প্রকাশিত কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান মতে, এক বছরে মুসলিমদের লক্ষ্য করে তিন হাজার ৩৬০টি ঘৃণামূলক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, এর আগের বছর যার সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৬৪৬। 
 
সূত্র : ম্যাকগিল রিপোর্টার
captcha