বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: এ সময় পুনরায় ইমামকে প্রশ্ন করা হল যে, এ সওয়াবের সৌভাগ্য তো কেবল কারবালার অধিবাসীরাই পাবেন। কারণ, যারা কারবালা নগরী থেকে দূরে অবস্থান করছেন তারা কিভাবে আশুরার দিনে ইমাম হুসাইন(আ.)এর মাজার জিয়ারত করে ঐ সওয়াবের অধিকারী হবেন?
উত্তরে ইমাম (আ.)বলেন: যারা কারবালা থেকে দুরে অবস্থান করছে তারা যেন কোন মরূদ্যানে (ফাঁকা মাঠে) বা নিজের বাড়ীর ছাদে উঠে ক্বাবামুখী হয়ে ইমাম হুসাইন(আ.)কে ইশারা করে সালাম দেয়,দরুদ পড়ে ও তাঁর শত্রুদের(খুনির) প্রতি অভিসম্পাত বা লানত করে এবং এরপর দু'রাকআত নামাজ পড়ে, (দুপুরে সূর্য হেলে পড়ার আগেই তা করা উত্তম)। এরপর নিজের ত্রুটি ও পাপগুলো স্মরণ করে তওবা করে এবং ইমাম হুসাইনকে(আ.)স্মরণ করে ক্রন্দন করে, একইসাথে বাড়ীতে উপস্থিত সবাইকে ক্রন্দনে উৎসাহ যোগায়।
এভাবে কেউ যদি নিজেকে ও নিজের বাড়ীর লোকদেরকে শোকার্ত করে তোলে তাহলে আমি নিশ্চিতভাবে উক্ত সওয়াব লাভের প্রতিশ্রুতি তাকে দিচ্ছি।
রাবী পুনরায় ইমাম বাকের(আ.)-কে প্রশ্ন করেন, আমরা পরস্পরকে কিভাবে সমবেদনা জানাব? তিনি বললেনঃ প্রভু ইমাম সাইন(আ.)-এর শোক-সভায় আমাদের জন্য সওয়াব ও পুরস্কারাদি রাখবেন। আর আমাদেরকে এবং আপনাকে ইমাম হুসাইন(আ.)-এর রক্তের প্রতিশোধ গ্রহণে, ইমাম মাহদী(আ.)-এর সাথীতে পরিণত করবেন।
যিয়রাতে আশুরায় আমরা ইয়াজিদ, তার বংশধর ও তার সাহায্যকারীদের উপর অভিসম্পাত করে বলি: হে প্রভু আমার অভিসম্পাতকে আহলে বাইত (আ.)’র উপর প্রথম অত্যাচারী জালিমের জন্য নির্ধারিত করে দাও, যে অত্যাচার দ্বারা সে অত্যাচারের সূচনা করেছিল । অতঃপর দ্বিতীয় অত্যাচারী, এরপর তৃতীয় অত্যাচারী, তারপর চতুর্থ জালিমের উপর [আমার অভিশাপ বর্ষণ কর]। হে প্রভু পঞ্চম ব্যক্তি ইয়াজিদের উপর অভিশাপ বর্ষণ কর । আব্দুল্লাহ বিন জিয়াদ ও ইবনে মারজানাহ, ওমর বিন সা'দ, শীমার, আলে আবু সুফিয়ান,আলে জিয়াদ,আলে মারওয়ান,এদের সকলের উপর কিয়ামত পর্যন্ত অভিশাপ বর্ষণ কর। অতঃপর সিজদায় অবনত হয়ে বলতে হবে ।
যিয়ারাতে আশুরায় ইমাম হুসাইন, তার পরিবার ও সাথীদের প্রতি সালাম দিয়ে আমরা বলি: হে আবা আবদুল্লাহ! আপনার প্রতি ও আপনার পবিত্র সত্তার প্রতি সালাম, যে সত্তা সমাধিত হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে আল্লাহর সালাম অনন্তকাল ব্যাপী, যতদিন এই দিবা-নিশি অবিচল আছে। প্রভু যেন এ জিয়ারতকেই আমার জীবনের শেষ জিয়ারতে পরিণত করে না দেন। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সন্তানগণ ও ইমাম হুসাইন(আ.)-এর সাথীদের প্রতি সালাম।
যিয়ারাতে আশুরার শেষ পর্যযায়ে আমরা বলি: হে প্রভু! আমি আপনার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি প্রকৃত কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারীদের ন্যায়। আহলে বাইত (আ.)-এর শোকে আমি যে শোকার্ত আমার এ আজাদারী ও শোকানুভুতিতে আল্লাহর প্রশংসা। হে প্রভু! যেদিন আপনার সম্মুখে দণ্ডায়মান হব সেদিন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাফায়াত আমার ভাগ্যে রাখুন। আর আপনার কাছে হুসাইন (আ.) ও তাঁর যে সকল সাথীরা খোদার পথে জীবন উৎসর্গ করেছে তাঁদের সাথে আমাকে আপনার কাছে সত্যে অবিচল রাখুন।